করদাতা নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে যা জানা প্রয়োজন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআর শর্তসাপেক্ষে করদাতাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অথবা স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে করদাতার নিবন্ধন বাতিল করতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ২৬২ অনুসরণ করা হয়ে থাকে। এই আইন অনুসারে করদাতা নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে যথাযথ যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়ে থাকে।
করদাতা নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়া এবং শর্ত
আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ২৬২ অনুসারে করদাতার নিবন্ধন বাতিলের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত শর্তাবলী এবং প্রক্রিয়া প্রযোজ্য হবে;
(১) একজন ব্যক্তি নিবন্ধন বাতিলের আবেদন করবেন, যখন উক্ত ব্যক্তি-
(ক) ধারা ২৬৪ অনুসারে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপনের বাধ্যবাধকতামুক্ত হলে এবং-
(অ) ধারা ২ এর দফা ২২ অনুসারে করদাতা হিসাবে আর সংজ্ঞায়িত না হলে;
(আ) পরপর ৩ (তিন) বৎসর করযোগ্য আয় শূন্য হলে এবং শারীরিক অক্ষমতার কারণে বা অন্য কোনো কারণে ভবিষ্যতে কোনো করযোগ্য আয় শূন্য হলে; বা
(ই) ধারা ১৬৬ এর অধীন আর রিটার্ন দাখিলের প্রয়োজন নেই;
(খ) মৃত্যু, অবসায়ন, অবলুপ্তি বা অনুরূপ অন্য কোনো কারণে অস্তিত্বহীন হয়ে যান;
(গ) স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন এবং বাংলাদেশে আয় উপার্জনমূলক কোনো কর্মকাণ্ড করবেন না;
(ঘ) ডুপ্লিকেট নিবন্ধন বা ভুল নিবন্ধন পেয়ে থাকেন;
(ঙ) আইনি মর্যাদা পরিবর্তন করেন;
(চ) অন্য কোনো আইনানুগ কারণ প্রদর্শন করেন।
(২) আয়কর কর্তৃপক্ষ, নিবন্ধন বাতিলের আবেদন পাওয়ার পর, আবেদনের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে করদাতার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবেন, যদি নিশ্চিত হন যে-
(ক) করদাতা কর্তৃক পরিশোধিতব্য কোনো বকেয়া দায় নেই;
(খ) করদাতার বিরুদ্ধে কোনো কর নির্ধারণ নিষ্পন্নাধীন নেই;
(গ) কোনো ফোরামে আয়কর সংক্রান্ত কোনো বিরোধ নিষ্পন্নাধীন নেই; এবং
(ঘ) করদাতা উপ-ধারা (১) এর অধীনে নিবন্ধন বাতিলের যে কারণ উল্লেখ করেছেন সেটার সত্যতা রয়েছে।
(৩) বোর্ড নিম্নবর্ণিত বিষয়ে স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে কোনো করদাতার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে, যথা;
(ক) উপ-ধারা (১) এবং (২) এর অধীন কোনো করদাতার নিবন্ধন বাতিলের যুক্তি রয়েছে;
(খ) কোনো করদাতার প্রকৃত বা বৈধ উৎসের কোনো আয় না থাকার যুক্তিসঙ্গত প্রমাণ/কারণ রয়েছে;
(গ) আর্থিক অপরাধ সংঘটনের লক্ষ্যে বা অর্থ পাচারের কোনো স্কিমের অংশ হিসেবে করদাতা হিসেবে নিবন্ধন করেছেন; বা
(ঘ) নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ভুল এবং অসত্য তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
(৪) বোর্ড যেভাবে উপযুক্ত বিবেচনা করবে, সেভাবে নিবন্ধন বাতিলকৃত করদাতার সমস্ত তথ্য এবং রেকর্ড নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে পারবে।
(৫) এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, "নিবন্ধন বাতিল" অর্থ একটি টিআইএন এর নিষ্ক্রিয়করণ, রহিতকরণ এবং সর্বসাধারণের ব্যবহার অনুপযোগীকরণ, কিন্তু ইতিমধ্যে প্রাপ্ত তথ্যের বিলোপ বা মোচন বোঝাবে না।
উপসংহার
কোনো করদাতা যুক্তিসঙ্গত কারণ উপস্থাপনের মাধ্যমে তার করদাতা নিবন্ধন বাতিলের জন্য কর কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করতে পারবেন। কর কর্তৃপক্ষ যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে করদাতার আবেদনের প্রেক্ষিতে অথবা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে করদাতার নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। করদাতা নিবন্ধন সম্পর্কিত সকল তথ্যের জন্য বিডিট্যাক্সেশনের সাথেই থাকুন।
Comments (0)